বিজ্ঞানে মুসলিমদের অবদান পর্ব- ১

 

বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান পর্ব- ১

প্রারম্ভিক কথা: 

বিজ্ঞান মুসলমান দুটি শব্দ অত্যন্ত গনিষ্ঠ। আল কুরআনের অপর নাম ‘আল হাকিম’ তথা বিজ্ঞানময়। আধুনিক বিজ্ঞান আজকে এই পর্যায়ে আসার পিছনে মুসলমানদের অবদান অনস্বীকার্য। জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চা করা মুসলমানদের ইমানের সাথে সম্পর্কিত। রাসূল স. বলেছেন-যে ব্যক্তি দুনিয়ায় কোন কোন মানুষের প্রয়োজন পূরণ করবে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার প্রয়োজন পূরণ করবেন। মুসলিমগণ তাদের আবিষ্কারের মাধ্যমে মানবজাতির কল্যাণে অবদান রেখেছেন। এই বিষয়ে -Robert Briffault-  বলেছেন ‘ বিজ্ঞান শুধু চমকপ্রদ আবিস্কারের জন্য নয় তার নিজের অস্তিত্বের জন্য মুসলিমদের কাছে  ঋণী ’। জার্মান পণ্ডিত Dr.karl opitaz  - এর মতে ‘ কুরআনের ৯৭টি সূরার ৩৫৫ টি আয়াত বিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট’। মুসলমানগন আনুষ্ঠানিকভাবে সপ্তম শতাব্দী থেকে ষোড়শ শতাব্দী পর্যন্ত চমকপ্রদ সকল আবিষ্কার করে পৃথিবীকে তাক লাগিয়েছে। বিজ্ঞানের যে ভীৎ মুসলমানরা পৃথিবীতে করেছিল আজকের আধুনিক বিজ্ঞানে তা স্পষ্ট।


বিজ্ঞানে মুসলিমদের শুরুর কথা:

পৃথিবীর প্রথম মানব ও প্রথম নবি আদম আ. এর মাধ্যমে পৃথিবীতে বিজ্ঞানের যাত্রা শুরু হয়। তিনি ছিলেন পৃথিবীর প্রথম কৃষক। কৃষি কাজে নানান যন্ত্রপাতি তিনিই আবিষ্কার করেন। যাতায়াতের জন্য যুগান্তকারী আবিষ্কার হল চাকা তিনি এই চাকা আবিষ্কার করেন। আল্লাহর নবি ইদরসি আ. ছিলেন পৃথিবীর প্রথম দিকের মানব। মানবজাতিকে প্রথম জ্যোতির্বিজ্ঞান ও অঙ্ক শিক্ষা দেন তিনি, পৃথিবীতে প্রথম কলম আবিষ্কার করেন তিনি। বস্ত্র সেলাই এর মেশিন ও লোহা দ্বারা অস্ত্র তৈরি ও তিনি উদ্ভাবন করেন। আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞান  শিল্প কারখানা তারই প্রতিফলন।

 দেখা যাচ্ছে মুসলিমদের সাথে বিজ্ঞানের সম্পর্ক একেবারে মূলের সাথে সংযযুক্ত। কুরআনে প্রত্যক্ষভাবে ৭০০ আয়াত বিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কিত। পৃথিবীর প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ‘ আল কারউইন ’ বিশ্ববিদ্যালয়  মুসলিমরাই প্রতিষ্ঠা করে। ইতিহাসে অষ্টম-নবম শতাব্দীকে সম্পূর্ণ মুসলিম শতাব্দী বলা হয়। এসময় জ্ঞান বিজ্ঞানে মুসলিমদের আবিষ্কার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল। এই ধারা ঊনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত চলে। আধুনিক বিজ্ঞানের পথিকৃৎ হলেন মুসলিম বিজ্ঞানীগণ। অনেক অমুসলিম যারা মধ্যযুগ কে অন্ধকার যুগ বলে থাকেন যা মুসলিমদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছাড়া আর কিছুই নয়। 

গণনা যন্ত্রের আবিষ্কার নিঃসন্দেহে কম্পিউটার আবিষ্কারের চাইতেও কঠিন ছিল এই  আ্যবাকাস কে কেন্দ্র করে পরবর্তীতে কম্পিউটার আবিষ্কার হয় যার পথিকৃৎ হলেন মুসলিমগণ। 


রসায়ন বিজ্ঞানে মুসলিমদের অবদান:

ইংরেজি কেমেস্ট্রি শব্দটি আরবি ‘ কিমিয়া ’ থেকে নেয়া হয়েছে। রসায়ন কে আল কিমি ও বলা হয় । বিজ্ঞানের সর্ববৃহৎ ও প্রধান শাখা হচ্ছে রসায়ন বিজ্ঞান। মানুষের দেহের ভিতর সংঘটিত কার্যাবলি থেকে সুউচ্চ সীমানায় নক্ষত্রলোক পর্যন্ত বিস্তৃত এই রসায়নের পরিধি। সর্বপ্রথম মিসরে রসায়ন চর্চা শুরু হয়। রসায়ন বিজ্ঞান মুসলিম সাধকরাই প্রতিষ্ঠা করেন। ‘ হাম বোল্ট ’ বলেন- ‘‘আধুনিক রসায়ন শাস্ত্র মুসলিমদের উদ্ভাবন এবং এই বিষয়ে তাদের কৃতিত্ব অতুলনীয়রুপে চিত্তাকর্ষক”। মহাগ্রন্থ আল কুরআনে রসায়ন বিজ্ঞানের অনেক আয়াত বিদ্যমান, কিন্তু ব্যাপক আলোচনা না করে শুধু কি পয়েন্ট গুলো তুলে ধরেছে। এম. আকবর. তার ‘‘ Science in the quran ” গ্রন্থে  ‘ Chemistry  ’ অধ্যায়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন- মহানবি স. এর হাদিস গ্রন্থে “ তিববুন নবি” অধ্যায় রয়েছে । এই ঔষধ কে রসায়ন শাস্ত্রে ফেলা যায়। তাহলে বলা যায় মহানবি স. ইসলামের প্রথম রাসায়নিক। ইসলামের চতুর্থ খলিফা আলী র. রসায়ন বিজ্ঞানের অনেক জ্ঞান রাখতেন। তার একটা উক্তি তিনি তার শিষ্য কে  বলেছিলেন- “ পারদ ও অভ্র একত্র করে যদি বিদ্যুতের মত কোন বস্তুর সাথে মিশিয়ে দিতে পার তাহলে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের অধীশ্বর হতে পারবে” । নিকৃষ্ট ধাতু থেকে সোনা তৈরির এই ফর্মূলার পরিকল্পনাকারী হিসেবে তাকে সর্বপ্রথম রসায়ন বিজ্ঞানী বলা যেতে পারে। 

Post a Comment

0 Comments